নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজবা উদ্দিন ফরহাদের চামড়া তুলে নেব আমরা। বরিশালের মেজবার বাড়িতে ঠাই নাই। মেজবা দুই গালে জুতা মার তালে তালে এই ধরনের অশ্লিল শ্লোগান প্রদান করে বিভিন্নস্থান থেকে নিয়ে আসা বিচ্ছিন্ন কর্মীরা। নিজেদের কুকীর্তি ঢাকতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিচ্ছিন্ন কর্মীদের দিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে হাসির খোরাক সৃষ্টি করেছে বরিশাল জেলা ছাত্রদল সভাপতি মাহফুজুল হক মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম। বরিশাল জেলা উপজেলার বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বরিশাল জেলা ছাত্রদল সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠু ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম নেতাকর্মীদের পদ দেয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে ঢাকায় পারি জমান। এবং ঢাকায় গিয়ে ঢাকাস্থ বরিশাল জেলা ছাত্রদল কমিটি নিয়েই ব্যস্ত বিতর্কিত কর্মকা-ের মূল হোতা মাহফুজুল আলম হোতা। ভুক্তভোগী সূত্রে তথ্য মতে সংবাদ প্রকাশের পর নিজেদের বাঁচাতে বিচ্ছিন্ন কর্মীদের দিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করান মিঠু ও কামরুল। রবিবার (২২) নভেম্বর ১১ টার পর বরিশাল নগরীর সদর রোডে বরিশাল জেলা ও মহানগরের ব্যানারে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ছাত্রদল সদস্য পরিচয়ে নিয়ে আসাদের নিয়ৈ এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। মানবববন্ধন করতে আসা সদস্য নেতাকর্মীদের কেন এই মানববন্ধন প্রশ্ন করা হলে অনেকেই জানেন না কার জন্য কিসের জন্য মানববন্ধন সবাই বলে মিঠু ভাইয়ের বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা কুচক্রি মহলের ইন্ধনে মিথ্যা সংবাদ লেখছে।
কেএই কুচক্রি মহল সে বিষয়ে জানতে চাইলে তার সঠিক জবাব দিতে পারে নাই। মূলত ভাড়ায় কিছু সংখ্যক বিচ্ছিন্ন কর্মীদের দিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন যাতে করে মিঠু কামরুলের পদ বাণিজ্যর বদনাম কিছু কমানো যায়। এসময় বক্তব্য রাখেন মেহেন্দিগঞ্জ প্যের যুগ্ম আহবায়ক সোহাগ সরদার,বানারীপাড়ার শাহাদত তালুকদার,মুলাদির কবির মোল্লা,বাখেরগঞ্জের রুবেল গোমস্তা,আগৈলঝাড়ার মহিদুল ইসলাম,উজিরপুরের তাইজুল ইসলাম,হিজলার মহসিন গাজি,সাইদুল, হাসান,বরিশাল জেলা ছাত্রদল নেতা আল-আমিন,রাহাত তালুকদার,মিজানুর রহমান,আল আমিন মৃধা, মোঃ শাহেদ ও মহানগরের রাহাত ফকির।
উল্লেখ্য বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক পদ প্রত্যাশী ছিলেন রোকনুজ্জামান। তাকে পদ পাইয়ে দিতে ৬০ হাজার টাকা উৎকোচ নেন বরিশাল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠু। তবে বয়স বেশি এবং বিবাহিত হওয়ার কারণে বাদ পড়েন রোকনুজ্জামান। পদ না পেয়ে ওই টাকা ফেরৎ চাইতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয় রোকনুজ্জামানকে। একইভাবে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক পদ প্রত্যাশী মাসুদ রানার কাছ থেকে নেন ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু তাকেও শেষ পর্যন্ত পদ দিতে পারেননি মিঠু। এভাবে শুধু রোকনুজ্জামান ও মাসুদ রানাই নয় অনেকের পদ প্রত্যাশী নেতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা ছাত্রদল সভাপতির বিরুদ্ধে। সরকার বিরোধী আন্দোলনে মাঠে না থাকলেও চাঁদাবাজিতে শীর্ষে অবস্থান করছেন এ নেতা। দলের দুর্দীনে যখন তৃনমূলের কর্মীরা মানবেতন জীবন যাপন করছেন সেই সময় তিনি রাজধানীর বিলাস বহুল হোটেলে মাসের পর মাস লাখ লাখ টাকা ভাড়া দিয়ে থাকছেন তিনি। কমিটি গঠনের পর রাজনীতির মাঠে দুই বছর নীরব থাকলেও চাঁদাবাজিতে সরব উপস্থিতি এ নেতার। কমিটির নামে দলের দুর্দীনে চাঁদাবাজির কারণে তৃনমূলের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। দলের দুঃসময়ে মাঠে থাকা নেতাদের বাদ দিয়ে ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট মাহফুজুল আলম মিঠুকে সভাপতি ও কামরুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রদলের একটি পকেট কমিটি ঘোষনা করা হয়। কমিটি গঠনের দুই বছরের বেশি সময় পার করলেও আজ পর্যন্ত আন্দোলনের মাঠে কোন ধরণের ভূমিকা রাখতে পারেননি এ দুই নেতা।
পারেননি পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করতেও। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসান তার নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য অযোগ্য দুই নেতাকে দিয়ে কমিটি গঠন করায় শুরু থেকেই এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেণ তৃনমূলের নেতাকর্মীরা। গত দুই বছরে আন্দোলনের মাঠে তাদের উপস্থিতি বলতে গেলে শূন্য। দলীয় কর্মসূচি বাদ দিয়ে তারা নানা অজুহাতে পড়ে থাকেন ঢাকায়। সংগঠনের সভাপতি মাহফুজ আলম মিঠুর বিরুদ্ধে দলীয় নেতার হাতের কব্জি কেটে দেয়াসহ আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে। একাধিক ছাত্রদলের নেতাকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সামনে ছাত্রদলের কমিটি। আমরা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে পদে রাখা হবেনা। সভাপতি মিঠু যা করছেন তা মানার মত নয়। কমিটি বানিজ্যের টাকা দিয়ে থাকছেন ঢাকার অভিজাত হোটেল উপবন ও রহমানিয়ায় যেখানে প্রতিদিন ভাড়া গুনতে হয় ৩ হাজার টাকা। মিঠু এমনভাবে চলাফেরা করেন দেশের একজন মন্ত্রীও এত ভিআইপিভাবে চলেন না। কিনেছেন নতুন প্রাইভেটকার। শুধু তাই নয় ওয়াকিটকি ব্যবহারের পাশাপাশি সাথে সার্বক্ষনিক তিনজন পিএস নিয়োগ দিয়েছেন। এরা হলেন- রাজু, রফিক ও আশিষ। মিঠু উৎকোচ বানিজ্যের জন্য নতুন করে ঢাকাস্থ বরিশাল জেলা ছাত্রদলের কমিটি করেছেন। ওই কমিটির নাম দিয়ে অনেকের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছেন। ঢাকাস্থ বরিশাল জেলা ছাত্রদলের কমিটির সভাপতি করার আশ্বাস দিয়ে রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রদলের এক নেতা বলেন, মাহফুজ আলম মিঠুকে কেউ ছাত্রদল নেতা হিসেবে চেনেন না। তাকে চেনে হাতকাটা মাহফুজ নামে।
নগরীর ১৫নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি হেলালের হাতের কব্জি কেটে আলোচনায় আসে মিঠু। জানিয়েছে। ছাত্রদলের বিভাগীয় টিমের নেতারাও মিঠুর অপকর্মের বিষয়টি অবগত আছেন সকলেই বলে তারা দাবি করেন। এমন কি বিএনপি কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৬তম জন্মদিন বরিশাল ও মহানগর থেকে শুরু সকল অঙ্গ সংগঠন পর্যায়েক্রমে কর্মসূচি পালন করেন। শুধু পালন করতে দেখা যায়নি বরিশাল জেলা ছাত্রদলকে। জানা গেছে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সম্পাদক সহ অনেকেই ঢাকায় বসে বরিশালের কলকাঠি নাড়াচাড়া রাজনীতি করছেন ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ।