দুই দলের নক আউট পর্ব নিশ্চিত হয়েছিল আগেই। দেখার বিষয় ছিল কারা হয় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। লড়াইয়ের ভেতর ছিল খণ্ড লড়াই। ম্যাচ ছাপিয়ে মূল আকর্ষণ ছিল মেসি-রোনালদোর দ্বৈরথ।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচে ন্যু ক্যাম্পে সেই লড়াইয়ে অনেকটা ম্লান লিওনেল মেসি। উজ্জ্বল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। সিআরসেভেনের জোড়া গোলে ন্যু ক্যাম্পে বার্সেলোনাকে ৩-০ ব্যবধানে উড়িয়ে গ্রুপ সেরা হিসেবে নক আউট পর্বে নাম লিখিয়েছে জুভেন্টাস।
প্রথম লেগের ম্যাচে জুভেন্টাসের মাঠে ২-০ গোলে জিতেছিল বার্সা। সেই ম্যাচে করোনার কারণে খেলতে পারেননি রোনালদো। ফলে ভক্তদের মাঝে ছিল আক্ষেপ। এবার সেই আক্ষেপ ঘুঁচেছে। কিন্তু লড়াইটা হলো না মনের মতো, যাও হলো একপেশে।
পুরো ম্যাচে মেসি বেশ ভালো খেলেছেন। কিন্তু কাঙ্খিত গোলের দেখাটাই পাননি। উল্টো রোনালদো দুটি পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে জয়ের আনন্দে ভাসালেন। গ্রুপ পর্বে টানা পাঁচ জয়ের পর এই প্রথম হারের স্বাদ নিল বার্সা। ২০১৬ সালের পর এই প্রথম গ্রুপ পর্বের ম্যাচে হারল বার্সেলোনা।
ম্যাচে জুভেন্টাস গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি বুফ্ন অসাধারণ খেলেছেন। ইতালিয়ান এই গোলরক্ষকের দেয়ালই ভাঙতে পারেননি মেসি। লক্ষ্যে সাতটি শট ছিল তার, এর একটিও জালে যায়নি। আবার ম্যাচে বার্সার বল পজিশন ছিল শতকরা ৬০ ভাগ, জুভেন্টাসের ৪০ ভাগ। বার্সার ১৯টি শটের সাতটি ছিল লক্ষ্যে, সেখানে জুভেন্টাসের নয়টি শটের চারটি ছিল লক্ষ্যে। বার্সা ৫টি কর্ণার আদায় করেছিল, জুভেন্টাস পেরেছিল একটি।
ম্যাচের ২০ মিনিটে মধ্যে দুই গোল করে আদায় করে নেয় জুভেন্টাস। ১৩ মিনিটে পেনাল্টি পায় সফরকারীরা। ডি-বক্সে ঢুকে পড়া রোনালদোকে ফাউল করে বসেন চোট কাটিয়ে এক মাস পর সম্প্রতি ফেরা ডিফেন্ডার রোনালদো আরাহো। গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে সোজাসুজি শটে গোল করেন রোনালদো।
২০ মিনিটে দারুণ নৈপুণ্যে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ম্যাককেনি। ডান দিক থেকে কুয়াদরাদোর ক্রসে দারুণ ভলিতে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন যুক্তরাষ্ট্রের এই মিডফিল্ডার। জুভেন্টাস এগিয়ে যায় ২-০ গোলে।
দুই মিনিট পর ব্যবধান কমার সম্ভাবনা জেগেছিল; তবে মেসির দূরপাল্লার নিচু শট প্রতিহত করেন বুফন। প্রথমার্ধেরে শেষ পাঁচ মিনিটে বেশ চাপ বাড়ায় বার্সেলোনা। মেসির সামনে আবারও সুযোগ এসেছিল, কিন্তু এবার গোলরক্ষক বরাবর শট নেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে রোনালদোর দ্বিতীয় গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায় জুভেন্টাস। বার্সেলোনার ডি-বক্সে ডিফেন্ডার লংলের হাতে বল লাগলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এবার জোরালো কোনাকুনি শটে গোলটি করেন রোনালদো (৩-০)।
ছয় মিনিট পর ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি বার্সেলোনা। মেসির ফ্রি-কিকে গ্রিজমানের হেড পোস্টে বাধা পায়। ৬৫ মিনিটে আবারও মেসিকে বিমুখ করেন বুফ্ন। খানিক পর মেসি বাঁকানো ফ্রি-কিকে রক্ষণ প্রাচীরের ওপর দিয়ে বল পাঠালেও শেষ পর্যন্ত চলে যায় বুফ্ন বরাবর।
৭০ মিনিটে বার্সার পক্ষে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি; তবে আগমুহূর্তে গ্রিজমান অফসাইডে থাকায় সেটাও বাতিল হয়ে যায়। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে আবারও মেসিকে হতাশ করেন বুফ্ন। ডি-বক্সের মুখ থেকে তার বাঁ পায়ের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি।
জি গ্রুপে ছয় ম্যাচে পাঁচ জয়ে জুভেন্টাসের পয়েন্ট ১৫। বার্সেলোনার পয়েন্টও ১৫। গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকা গ্রুপ সেরা জুভেন্টাস। অন্য ম্যাচে ফেরেন্সভারোসকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপা লিগে খেলা নিশ্চিত করেছে ডায়নামো কিয়েভ।
Leave a Reply