অনলাইন ডেস্ক ॥ বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায় সন্ধ্যা নদীর তীরে গড়ে উঠবে হাইটেক পার্ক। তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। বৃহৎ আকারে প্রকল্প গ্রহণের জন্য বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় ছোট পরিসরে একটি হাইটেক পার্কের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আসার পরও নতুন করে এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে; যার কারণে দফায় দফায় হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল সন্ধ্যার তীরে সম্ভাব্যতা যাচাই করছে। জানা গেছে, ২০১২ সালে শেরেবাংলার স্মৃতিবিজড়িত চাখার ইউনিয়নের সোনাহার-সাকরাল গ্রামের সন্ধ্যা নদীর তীরে হাইটেক পার্ক করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। বাংলাদেশ জাপান ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম খান বুলবুল ও সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তাদের প্রচেষ্টায় ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম খানসহ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা চাখারে হাইটেক পার্ক স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৭ সালের ১২ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় পরিদর্শন করেন তৎকালীন ‘শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার’ শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব গোরীশংকর ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) মো. আবদুর রহিম, সহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ আহম্মেদ, চীনা আইটি বিশেষজ্ঞ আবুলইকিমু আবুলইমিতি। সর্বশেষ গত ১৯ নভেম্বর তৃতীয় দফায় পরিদর্শন করেন হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উপসচিব জোহরা বেগম, সহকারী প্রকৌশলী প্রকৌশলী মো. মাহাবুল আলম। বানারীপাড়ার সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, শেরেবাংলার জন্মভূমিতে তার নামে হাইটেক পার্ক হবে এটা পুরো দক্ষিণাঞ্চলবাসীর দাবি। এজন্য জেলা প্রশাসন সোনাহার-সাকরাল গ্রামে প্রায় ১০ একর জমি বরাদ্দ দিয়েছে। এর আগে পরিদর্শনে যাওয়া হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উপসচিব জোহরা বেগম বলেন, তিনিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সরেজমিন পরিদর্শনের প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছেন। ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব হোসনে আরা বেগম বলেন, প্রতিবেদন এখন পর্যন্ত তার কাছে পৌঁছায়নি। সরেজমিন প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। জানা গেছে, চাখারে হাইটেক পার্ক করার বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভূগছেন হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। তারা চাচ্ছেন, শতাধিক একর আয়তনের জমি ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। ওই সূত্রগুলো জানায়, বরিশালের সমমানের বিভাগীয় শহর সিলেটে হাইটেক পার্ক করা হয়েছে ১৬৩ একর জমির ওপর। একই সময়ে বরিশাল নগরীতে জমি সংকটের কারণে নথুল্লাবাদে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন করা হয় মাত্র ২ দশমিক ৫১ একর জমির ওপর। হাইটেক কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে, বিভাগীয় শহর হিসাবে বরিশালেও সিলেটের সমমানের একটি হাইটেক পার্ক হোক। এ প্রসঙ্গে সাবেক এমপি মনিরুল ইসলাম মনি বলেন, চাখারে নির্ধারিত ১০ একর জমির আশপাশে প্রচুর খাসজমি রয়েছে। জমি অধিগ্রহণ করারও সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে শুধু সদিচ্ছাই যথেষ্ট। হাইটেক পার্ক মূলত তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর একটি বিশেষ স্থান। আইটি সংক্রান্ত সব কাজ সম্পাদন করা, আইটিকে ব্যবসা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা, আইটি সেক্টরে সুযোগ-সুবিধা তৈরি, তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত আমদানি-রপ্তানির সুবিধা সংবলিত যে পার্ক গড়ে তোলা হয় তাকেই হাইটেক পার্ক বলে। দেশ-বিদেশের নাম করা বড় বড় তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো এ পার্কে কোম্পানি খুলে তাদের কাজ করতে পারবে। প্রযুক্তিভিত্তিক শিল্পায়ন, তরুণদের কর্মসংস্থান এবং হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার শিল্পের উত্তরণ ও বিকাশে সুযোগ সৃষ্টি করে হাইটেক পার্ক।
Leave a Reply