নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ হাঁড়কাঁপানো শীতে সকাল থেকেই বরিশাল নগরের রাস্তাঘাট ছিল ফাঁকা। বিকেলে শীত আরও জেঁকে বসায় মানুষ আগেভাগেই ঘরে ফেরে। আর সন্ধ্যায় ঘর থেকে বের হননি অনেক মানুষই। কিন্তু নগরের নাজিরমহল্লার একটি বাড়িতে বিয়ের আয়োজনে উৎসুক অনেকে শীত উপেক্ষা করে হাজির হন জোড় বিয়ে দেখার জন্য। বিয়ের বর যমজ দুই ভাই। কনেও যমজ দুই বোন। গত সোমবার রাত ১১টার দিকে নগরের নাজিরমহল্লা এলাকায় এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। যমজ দুই বরের বাড়ি পিরোজপুরে। আর যমজ দুই কনের বাড়ি বরিশাল নগরের নাজির মহল্লা এলাকায়। রাত নয়টায় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও লগ্ন মেলাতে গিয়ে তা শুরু হয় রাত ১১টায়। আলোচিত এই বিয়ের কনেরা হলেন বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী ও নগরের নাজির মহল্লা এলাকার বাসিন্দা স্বপন কর্মকারের যমজ মেয়ে সোনালী কর্মকার (সোনা) ও রূপালী কর্মকার (রূপা)। আর যমজ দুই বর হলেন পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার ইন্দেরহাট এলাকার মৃত নিখিল লাল কর্মকারের যমজ ছেলে সজল কর্মকার ও কাজল কর্মকার। কনে দুই বোনের মধ্যে সোনালী বড়। বর দুই ভাইয়ের মধ্যে সজল বড়। পারিবারিকভাবেই তাঁদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর দুই ভাইয়ের প্রতিক্রিয়া ছিল পারিবারিকভাবে আয়োজন করা এই বিয়েতে তাঁরা ভীষণ খুশি এবং সবাই তাদের বিয়েতে উপস্থিত হয়ে আশীর্বাদ করায় কৃতজ্ঞ। দুই পরিবারের সদস্যরা জানান, বেশ কয়েক মাস ধরেই বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। এরপর পাকা কথা হয় মাস খানেক আগে। এরপর সোনালী-সজল এবং রূপালী-কাজলের বিয়ের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়। ব্যতিক্রমী এই বিয়ের খবর শুনে গতকাল রাতে কনের বাড়িতে জড়ো হন উৎসুক লোকজন। নগরের কাউনিয়া থেকে বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিলেন তপন দাস নামের এক ব্যক্তি। তিনি বললেন, ‘দাওয়াত পাইনি। তবুও বর-কনে দেখতে এসেছি। এমন বিয়ের আয়োজনটা সত্যি খুব ভালো লেগেছে।’ কনেপক্ষের স্বজন রাজীব কর্মকার বলেন, এটা আসলেই ব্যতিক্রমী এক বিয়ের আয়োজন। আত্মীয় হিসেবে ভিন্নতর এক আগ্রহ নিয়েই বিয়েতে অংশ নিতে এসেছি।’ এরই মধ্যে যমজ বর-কনেদের বিয়ের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। ছবি পোস্ট করে তাঁদের সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য শুভকামনা জানান অনেকে।
Leave a Reply