এন এম দেলোয়ার, পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥ রাষ্ট্রের কঠোর আইনে ও কি নারী নির্যাতনের রাশ টানা সম্ভব হয়েছে ? জেলা ও উপজেলার নারী অধিকার কর্মীরা বলেছেন, আসলেই কমেনি। তাদের ভাষ্য বরং পিরোজপুর জেলা সদর সহ স্বরূপকাঠি ও বাকি সব উপজেলায় একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকায় যে অনিরাপদ পরিস্থিতি ও পরিবেশ তৈরী হয়েছে, সে জন্য বাল্যবিয়েও কমছে না। এর পেছনে বাল্যবিয়ে নিরোধ একটি বিশেষ বিধান ও সহায়ক হয়ে হয়ে উঠেছে। একান্ত আলাপ চারিতায় জেলা অফিসে রাজনীতিবিদ, সমাজ সেবক ও নারী নেত্রীরা আলাপ চারিতায় অংশ গ্রহণ করেন।এসময়ে ডাঃ ডি হুসাইন। বলেন, বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হলে সবার আগে আমাদের মনের রোগ দূর করতে হবে। এদিকে অন লাইন দৈনিক স্বরূপ বিণ্যাস পত্রিকার ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক মোঃ ফিরোজ শেখ বলেন, আসলে আইনের ফাঁক ফোকর সহ দারিদ্রতার কারণে বাল্য বিয়ে থামানো যাচ্ছে না। আলোচনায় আর এক ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক বাবু বিশ্বজিৎ হালদার খোকন অকপটে বলেন, বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে হলে সবার আগে ব্যাপক ভাবে গণ সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।গত শুক্রবার অন লাইন দৈনিক স্বরূপ বিণ্যাস পত্রিকার জেলা বুরোর অস্থায়ী অফিসে আরও বক্তব্য রাখেন নারী নেত্রী রোকসানা পারভীন সহ রোজিনা আক্তার, তামান্না ইসলাম, সুমি হালদার প্রমুখরা।বাল্যবিয়ে নিরোধ কল্পে ২০১৮ সালে সরকার যে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে,সেখানে ২০২১ সালের মধ্যে বাল্যবিয়েএক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করা হলেও এখনো যে খুব একটা অগ্রগতি হয়নি। তার প্রমাণ জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনষ্টিটিটের জরিপের তথ্যেই রয়েছে। বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক এন্ড হেলথ্ সার্ভে অনুযায়ী দেশে ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের ৫৯ শতাংশেরই১৮ বছরের কম বয়সে বিয়ে হয়। এর আগে ২০১৪ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল প্রতিষ্ঠানটি তাতেও বাল্য বিয়েরহার একই ছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১২-১৩ সালের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার জরিপে দেশে ২০-১৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে ৫২.৩ শতাংশেরই বাল্যবিয়ে।অর্ধ যুগ পর২০১৯ সেই জরিপে বাল্যবিয়ের হার কিছুটা কমে দাড়ায় ৫১.৪ শতাংশে।এদিকে ১৯২৯ সালে ” চাইল্ড ম্যারেজ রেসট্রেইন্ট অ্যাক্ট” অনুযায়ী মেয়েদের ১৮ বছরের কম বয়সে বিয়ে দেয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইনটি বাতিল করে ২০১৭ সালে সরকার শাস্তি বাড়িয়ে বাল্যবিয়ে নিরোধ আইন প্রনয়ণ করলেও তাতে ‘ বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্কের স্বর্বোত্তম স্বার্থে বিয়ের সুযোগ রাখা হয়। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বলেন , ” বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আমাদের সংগঠন সহ সরকারি নানান মুখি পদক্ষেপ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ মাধ্যম কর্মীরা মাঠে নেমেছে। তার মধ্যে হয়তো দু একটা ঘটনা ভুলে ঘটতে পারে । আসলে আমাদের দেশের পেক্ষাপটে বাল্যবিয়ে আগের চেয়ে কমে গেছে, আর সেটা আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি।
Leave a Reply