নলছিটি প্রতিনিধি ॥ ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বিন্দুঘোষ গ্রামের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা করম আলী আকনের দুই সন্তান জামাল ও কামালকে ভাতা বঞ্ছিত করে অন্যত্র বিয়ে হওয়ার পরও প্রথম স্বামীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা তুলে খাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পিতার ভাতা তার সন্তানরা পেতে ওই মুক্তিযোদ্ধার ছেলে জামাল আকন মুক্তিযোদ্ধা কল্যঠু ট্রাস্টের পরিচালক বরাবরে তিনি এ আবেদন করেছেন। আবেদনে জামাল আকন দাবি করেন, করম আলী আকন বীরত্বের সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দুই সন্তান জামাল ও কামালসহ স্ত্রী আম্বিয়া খাতুনকে রেখে ১৯৭১ সালের ২৪ জুন রণাঙ্গনে শহীদ হন। তার শহীদ গেজেট নং-১৩১, লাল মুক্তিবার্ত নং- ০৬০২০২০৩০৬। শহীদ মুক্তিযোদ্ধা করম আলীর স্ত্রী ও দুই ছেলে ছাড়া আর কোন উত্তরসূরী নেই। কিন্তু স্ত্রী ৫ ও ৭ বছর বয়সী দু’শিশু সন্তান রেখে মুক্তিযোদ্ধা স্বামীর মৃত্যুর কয়েক বছর পরেই একই গ্রামের হোসেন আলী হাওলাদারের ছেলে আঃ রাজ্জাক হাওলাদারের সাথে শরীয়াহ মোতাবেক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন আম্বিয়া খাতুন। আম্বিয়া খাতুনের দ্বিতীয় বিবাহে আঃ রাজ্জাকের ঔরশে সালাম হাওলাদারের জন্ম হয়। আম্বিয়া খাতুন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সংসার ও সন্তান ফেলে রেখে দ্বিতীয় স্বামীর সংসার করলেও দুই সন্তানকে বঞ্ছিত করে প্রথম স্বামী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা করম আলীর ভাতা তুলে খাচ্ছেন আম্বিয়া খাতুন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা কল্যঠু ট্রাস্টের সকল সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত হয়ে তা পেতে আবেদন জানান জামাল আকন। জামাল আকন আরো জানান, আম্বিয়া খাতুনের দ্বিতীয় বিবাহের স্বামী আঃ রাজ্জাক শিউলি নামে আরেকজনকে বিয়ে করেন। আম্বিয়া ও শিউলীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় শহীদ মুক্তিযোদ্ধা করম আলীর ঘরে এসে আঃ সালামকে নিয়ে বসবাস করেন। এতে তাঁদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনের সৃষ্টি হয়। এ সুযোগে সম্পত্তি আত্মসাতের পায়তারা করে। আঃ সালাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধা করম আলীর কোন সম্পত্তি ভোগ দখলের অধিকার রাখে না মর্মে নলছিটির সহকারী জজ আদালতে মামলা (নং-১১/২১) দায়ের করা হয়। যা আদালতে মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মামলা ও আবেদন করার পর ক্ষিপ্ত হয় নানা ভাবে হুমকি ও হয়রানি করেছে বলেও অভিযোগ করেন জামাল আকন। এলাকাবাসী জানায়, আম্বিয়া প্রথম মুক্তিযোদ্ধা স্বামী শহীদ হওয়ার পর আঃ রাজ্জাক হাওলাদারের সাথে শরীয়াহ মোতাবেক দ্বিতীয় বিয়েতে বসেন। এলাকার অনেক লোক ওই বিয়েতে অংশ নেন। কিন্তু বিয়ের বসার পরেও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার দুই সন্তানকে বঞ্চিত করে ভাতা ও সকল সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন। অভিযোগের বিষয়ে আম্বিয়া খাতুনের মতামত পাওয়া যায়নি। এদিকে আবেদনের প্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা কল্যঠু ট্রাস্ট থেকে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক বরাবরে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের অনুরোধ জানানো হয়। তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী তার কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিফাত বিন সাদিককে দায়িত্ব প্রদান করেন। জানতে চাইলে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সিফাত বিন সাদিক জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে, তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
Leave a Reply