বিদেশ ডেস্ক ॥ সবচেয়ে ভয়াবহ রক্তাক্ত দিন দেখল মিয়ানমার। শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচার গুলিতে ১১৪ জন নিহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর। এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে বিশ্বজুড়ে। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশ এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এ ঘটনাকে ‘ভয়ানক’ বলে অভিহিত করেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, শনিবার মিয়ানমারে ১০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে, জান্তা সরকার গুটিকয়ের জন্য সাধারণ মানুষ হত্যা করছে। ব্লিংকেন আরও বলেন, বার্মার সাহসী জনগণ সামরিক বাহিনীর সন্ত্রাসের রাজত্ব প্রত্যাখ্যান করেছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বলেছিল, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ‘নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষকে হত্যা করছে’। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) শনিবারই বলেছে, শনিবার মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবস সন্ত্রাস ও অসম্মানের দিনে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মিয়ানমারে শনিবারের হতাহতের ঘটনায় তিনি স্তম্ভিত। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেছেন, এমন পরিস্থিতি হতাশাজনক। শনিবার ছিল মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবস। এ দিন রাজধানী নেপিডোতে সেনা কুচকাওয়াজের পরপরই সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে চরম দমনপীড়ন চালানো হয়। পর্যবেক্ষণ সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) শনিবার ৯১ জন নিহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, নিহত সংখ্যা আরও বেশি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে দেশটিতে একদিনে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার নাও–এর খবরে বলা হয়েছে, শনিবার মান্দালয় শহরে শিশুসহ অন্তত ৪০ জন ও ইয়াঙ্গুনে ২৭ জন নিহত হন। শনিবারের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ প্রায় এক ডজনের বেশি দেশের সেনাপ্রধান এক যৌথ বিবৃতিতে মিয়ানমারের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, দেশটির সেনাবাহিনী নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র প্রয়োগ করছে। দুই মাস ধরে চলা এ জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে শনিবারের ১১৪ জনসহ চার শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন এ পর্যন্ত। এছাড়া এই সময়ে আটক হয়েছেন প্রায় তিন হাজার মানুষ। গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় এনএলডির নেতা অং সান সু চিসহ তার দলের শীর্ষ নেতাদের। সেই থেকে শহর-নগরগুলোতে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত।
Leave a Reply