বিদেশ ডেস্ক ॥ ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র কিউবার ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন কিংবদন্তি বিপ্লবী ফিদেল কাস্ত্রোর ছোটভাই রাউল কাস্ত্রো। শুক্রবার দলের কংগ্রেসের উদ্বোধনী অধিবেশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি ছয় দশক ধরে চলা কাস্ত্রোযুগের অবসানের এ ঘোষণা দেন বলে বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। রাউল বলেছেন, নবীন প্রজন্মের হাতে নেতৃত্বের ভার তুলে দিতেই তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। “পার্টির নেতৃত্বে থাকবে নতুন প্রজন্ম, যারা সাম্রাজ্যবাদবিরোধী আবেগ ও চেতনায় পূর্ণ,” বলেছেন ৮৯ বছর বয়সী এ কমিউনিস্ট নেতা। ৪ দিনের কংগ্রেসের শেষ পর্বে প্রতিনিধিরা তাদের পরবর্তী নেতা বেছে নেবেন। কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ পদ ফার্স্ট সেক্রেটারি, রাউলের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে এবার কিউবার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ৬০ বছর বয়সী মিগেল দিয়াজ-কানেলের সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। রাউল দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর ২০১৯ সালে দিয়াজ-কানেলই ক্যারিবীয় এ দ্বীপরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন। পাঁচ বছর আগে কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির সর্বশেষ কংগ্রেসে রাউল ২০২১ সালেই নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ১৯৫৯ সালে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে যে ‘ঐতিহাসিক প্রজন্ম’ যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত স্বৈরশাসক বাতিস্তা সরকারের পতন ঘটিয়েছিল তাদের হাতে এই দফার পর আর নেতৃত্ব থাকবে না, সেসময় বলেছিলেন তিনি। শুক্রবার হাভানার একটি কনভেনশন সেন্টারে কংগ্রেসে জড়ো হওয়া কমিউনিস্ট পার্টির কয়েকশ প্রতিনিধির উদ্দেশ্যে নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে রাউল বলেন, “যতদিন বেঁচে আছি, পিতৃভূমি, বিপ্লব ও সমাজতন্ত্র রক্ষায় সদা প্রস্তুত থাকবো।” ভাষণে দিয়াজ-কানেলের প্রশংসাও করেছেন তিনি। পাঁচ বছর পরপর হওয়া কিউবান কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসই দলটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকেই নীতি নির্ধারণী বিভিন্ন বিষয়সহ পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়। বড় ভাই ফিদেল অসুস্থ হয়ে পড়লে ২০০৬ সালে কিউবার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন রাউল; ২০১১ সালে কমিউনিস্ট পার্টিরও প্রধান হন তিনি। তার হাত ধরে কিউবায় বেশকিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার হয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও প্রত্যাশা কিউবার নেতৃত্বে থাকা বিপ্লবী প্রজন্মের এ শেষ প্রতিনিধির।
Leave a Reply