আমতলী প্রতিনিধি ॥ প্রাণঘাতী করোনার কারণে পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ ও উচ্চ ফলনশীল বারী মুগডাল-৬ জাপানে রপ্তানী বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আমতলীর প্রান্তিক কৃষকরা। দ্রুত জাপানে ডাল রপ্তানীর দাবী জানিয়েছেন তারা। জানা গেছে, ২০১৬ সালে আর্ন্তজাতিক সংস্থা ইফাদ’র অর্থায়নে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের সহায়তায় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উচ্চ ফলনশীল বারী মুগডাল-৬ প্রান্তিক কৃষকদের চাষাবাদে আগ্রহী করতে প্রকল্প নেয়। পেজ (ঢ়ধপব) প্রকল্পের মাধ্যমে বে-সরকারী উন্নয়ন সংস্থা সংগ্রাম ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। কৃষকদের উৎপাদিত ডাল ন্যায্য মুল্যে বিক্রির জন্য জাপানী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ ইউগ্লেনার সাথে চুক্তি করে সংগ্রাম। সংগ্রাম কর্তৃপক্ষ কৃষকদের উচ্চমুল্যে ডাল বিক্রির জন্য গ্রামীণ ইউগ্লেনার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে দেয়। বরগুনা ও পটুয়াখালীর প্রান্তিক কৃষকদের উৎপাদিত ডাল বাজার মুল্যের চেয়ে কেজি প্রতি ১০ টাকা বেশী দামে গ্রামীণ ইউগ্লেনা ক্রয় করে। গত তিন বছরে আমতলীর প্রায় ১০০ মেট্রিক টন ডাল ওই প্রতিষ্ঠান ক্রয় করে জাপানে রপ্তানি করে। এতে উপজেলার কৃষকরা বেশ উপকৃত হয়েছে বলে জানান কৃষকরা। কিন্তু প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে ওই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। কৃষকের দাবী ওই প্রকল্পের কর্মকর্তারা মধ্যস্বত্তভোগীদের (ফরিয়া) এড়িয়ে প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে বাজারের চেয়ে বেশী দামে ডাল ক্রয় করতো। কিন্তু ওই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে ডাল ক্রয় বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে ফরিয়াদের মাধ্যমে ডাল বিক্রি করতে হয় প্রান্তিক কৃষকদের। এতে ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে উপজেলার ১২ হাজার ৫০০ কৃষক। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ উচ্চ ফলনশীল বারী মুগডাল-৬ কৃষকদের চাষে উৎসাহী করতে এবং ন্যায্য মুল্যে ডাল বিক্রির জন্য ওই প্রকল্প চালুর দাবী জানিয়েছেন কৃষকরা। কৃষক মোঃ আল আমিন, কবির হোসেন মৃধা ও সোহেল রানা বলেন, জাপানে মুগডাল যাওয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রান্তিক কৃষকরা ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ফরিয়াদের চাপিয়ে দেয়া মুল্যেই বর্তমানে ডাল বিক্রি করতে হয়। তারা আরো বলেন, জাপানে পাঠানো ক্রয়কৃত ডাল বাজার মুল্যের চেয়ে ১০ টাকা কেজি প্রতি বেশীতে বিক্রি করতে পারতাম। এখন আর তা হচ্ছে না। তারা দ্রুত জাপানে ডাল রপ্তানীর দাবী জানিয়েছেন। বে-সরকারী উন্নয়ন সংস্থা সংগ্রাম’র উপ-নির্বাহী পরিচালক চৌধুরী মোঃ মঈন বলেন, পুষ্টিগুন সমৃদ্ধ ও উচ্চ ফলনশীল বারী মুগডাল-৬ চাষে কৃষকদের উৎসাহী করাই ছিল এ প্রকল্পের মুল কাজ। ওই প্রকল্প বরগুনা জেলায় সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এতে বরগুনার ৭ হাজার ৩’শ কৃষক উপকৃত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, কৃষকদের উৎপাদিত ডাল গ্রামীণ ইউগ্লেনা নামের একটি জাপানী প্রতিষ্ঠান প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি উচ্চ মুল্যে ক্রয় করতো। এতে কৃষকরা বেশ লাভবান হয়েছে। এ প্রকল্প চলমান থাকলে কৃষকরা আরো উপকৃত হতো। আমতলী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বিএম রেজাউল করিম বলেন, উচ্চ ফলনশীল বারী মুগডাল-৬ জাপানী একটি প্রতিষ্ঠান সরাসরি আমতলীর প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে উচ্চ মুল্যে ক্রয় করতো। ওই ডাল জাপানে রপ্তানী হতো। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে ওই ডাল জাপানে রপ্তানী বন্ধ রয়েছে। এতে উপজেলার কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জাপানে ডাল রপ্তানী শুরু হলে উপজেলার কৃষকরা উপকৃত হবে।
Leave a Reply