আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ॥ আগৈলঝাড়ায় স্বামীকে ফাঁসাতে নিজের গর্ভের ৫ মাসের ভ্রুণ হত্যা করে অন্যের ফ্রিজে রেখেছেন মা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করেনি। স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রত্নপুর ইউনিয়নের বেলুহার গ্রামের সিরাজ ভূইয়ার মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের সাথে পার্শ্ববর্তী গৌরনদী উপজেলার বিল্বগ্রাম এলাকার ছত্তার ঘরামীর ছেলে জামাল ঘরামীর সাথে গত ৩ বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের দেড়বছর পর তাদের একটি শারীরিক প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্ম হয়। জন্মের কিছুদিন পরে ওই সন্তান মারা যায়। এর ৬মাস পরে পারিবারিক অশান্তির কারনে বাবার বাড়ি চলে আসে সুমাইয়া। এরপর থেকে বাবার বাড়িতেই থাকছে সে। কয়েক মাস আগে আবার গর্ভবতী হয়ে পরে সুমাইয়া। গর্ভবতী হওয়ার প্রায় ৫ মাস পূর্বে নিজ গর্ভের সন্তানের ভ্রুণ নষ্ট করে এবং মৃত অবস্থায় প্রসব করে ওই ভ্রুণ। এরপর ভ্রুনটি একটি প্লাস্টিকের কৌটার ভিতরে করে গত ১৫ থেকে ২০ দিন পূর্বে পাশের বাড়ির আব্দুর রশিদ ভূইয়ার ফ্রিজে রেখে আসে সুমাইয়া। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আব্দুর রশিদ ভূইয়ার মেয়ে ফ্রিজ পরিস্কার করতে গিয়ে প্লাস্টিকের কৌটাটি দেখে সন্দেহ হলে কৌটাটি খুলে ভিতরে মানুষের আকৃতির রক্তের ভ্রুণ দেখতে পেয়ে বিষয়টি সম্পর্কে সুমাইয়াকে জিজ্ঞেস করলে প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে নিজের গর্ভের ভ্রুণের কথা স্বীকার করে সে। গর্ভের ভ্রুণ হত্যাকারী সুমাইয়া বলেন, গত তিন বছর আগে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর পারিবারিক অশান্তির কারনে আমি বাবার বাড়িতে চলে আসি। কিন্তু বর্তমানে আমার স্বামী আমাকে ভরন-পোষন না দেওয়ার কারনে আমি আমার গর্ভের সন্তান নষ্ট করি এবং প্রসব করি। এরপর ওই ভ্রুণটিকে আমি কোর্টে হাজির করার উদ্দেশ্যে পাশের বাড়ির ফ্রিজে রাখি। ফ্রিজের মালিক আব্দুর রশিদ ভূইয়ার স্ত্রী ও মেয়ে জানান, গত ১৫ থেকে ২০ দিন পূর্বে রোজার মধ্যে একটি প্লাস্টিকের কৌটা ফ্রিজে রাখার জন্য বলেন সুমাইয়া। বৃহস্পতিবার ফ্রিজ পরিস্কার করতে গিয়ে প্লাস্টিকের কৌটাটি দেখে সন্দেহ হলে কৌটাটি খুলে ভিতরে মানুষের আকৃতির রক্তের ভ্রুনটি দেখতে পেয়ে এলাকাবাসীকে জানান তারা। এলাকাবাসী বলেন, গর্ভের সন্তান বা ভ্রুণ নষ্ট করা আইনত অপরাধ। তারপরে স্বামীকে ফাঁসাতে সেই ভ্রুণ অন্যের ফ্রিজে রাখে সে। বিষয়টি লোকজনের মধ্যে জানাজানির পরে এবং ওই প্লাস্টিকের কৌটাটি নিয়ে বাথরুমে ফেলে দেয়। এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি জানতে পেরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পরবর্তীতে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply