পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি ॥ স্বরূপকাঠির দৈহারী ইউনিয়নের খারারবাগ এলাকার সন্তান মোরলগঞ্জের জামাই সজল মন্ডলকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করার গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ উঠেছে গোপাল সরকারের বিরুদ্ধে। সরেজমিনে যাওয়া জেলার ও স্থানীয় গণ মাধ্যম কর্মীদের জানান বনগ্রাম মহিশপুরা এলাকার স্বর্গীয় বিমল সরকারের ছেলে গোপাল সরকার। আর স্বর্গীয় বিমলের মেয়ে বিউটি সরকার সজলের স্ত্রী। গত ২৮/০৫/২০২১ তারিখে স্বরূপকাঠির খারারবাগ এলাকার সন্তান মোরলগঞ্জের বনগ্রাম মহিষপুরা গ্রামের জামাই শশুর বাড়ি যান সজল মন্ডল (২৭)। গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টার সময়ে শশুর বাড়ি যাওয়ার পর থেকেই সুপরিকল্পিত ভাবে সজলের সাথে গায়ে পড়ে ঝগড়া করার পায়তারা চালায় শশুর বাড়ির লোকজন। বার বার স্ত্রীকে তৈরী হতে বলেন স্বরূপকাঠি যাওয়ার জন্য।কিন্তু স্বামীর কোন কথাকেই গুরুত্ব দিচ্ছে না বিউটি সরকার ও তার পরিবার। এদিকে গত ছয় বছর আগে উভয়ের সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে এবং পারিবারিক সম্মতিতে হিন্দু মতে বিয়ে সম্পন্ন হয়। ফুটফুটে একটা সন্তানও আসে বিউটি সরকারের কোলঝুড়ে। কিন্তু হঠাৎ উভয় পরিবারের মধ্যে একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয় বিউটির বাবা ও সজলের শশুর মারা যাওয়ার পর থেকেই। আর সেই সূত্র ধরেই মেয়ের পরিবার জামাইয়ের উপর ভীষণ ক্ষুব্ধ হয় স্বরূপকাঠিতে যাওয়া নিয়ে। সরেজমিনে যাওয়া সাংবাদিকদের স্থানীয় বনগ্রাম মহিশপুরা এলাকার বেশির ভাগ লোকজন গণ মাধ্যম কর্মীদের বলেন গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আমাদের এলাকার জামাইয়ের সাথে যা যা করেছে তাহা ন্যাক্কার জনক। মৃত্যুর উদ্দেশ্য নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় মারধর সহ ইনজেকশন পুশ করে বলে জানায়। প্রত্যক্ষ দর্শি বহু লোকজন আরও বলেন সজল মন্ডলকে একতরফা ভাবে গোপাল সরকারের নেতৃত্বে বিবেক, সৌরভ ও অপূর্ব এলোপাতাড়ি ভাবে মারধর সহ হাতুড়ি দিয়ে একের পর এক আঘাত করে।এদিকে মার খাওয়ার এক পর্যায়ে সজল পুলিশ কন্ট্রোল রুমে কোনমতে ৯৯৯ কল দেয়।ঐ সময়ে মোরলগঞ্জের থানা প্রশাসনের ভূমিকা প্রশংসনীয় হলেও মেয়ে পরিবার স্থানীয় প্রশাসনকে কোন রকম সহযোগিতা করেনি। বরং চেতনা নাশক ইনজেকশন পুশ করে বিউটির ভাইয়েরা অজ্ঞান করে ফেলে। এদিকে হামলার এক পর্যায়ে ৯৯৯ নম্বরে কল সহ স্বরূপকাঠি থেকে ছেলের মায়ের ফোন আসে সজলের কাছে। ফোন রিছিব করার পর সজল মন্ডল তাকে মাকে বলে মা আমাকে বাঁচাও। ওরা আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে যাচ্ছে।আর সেই শেষ কথা শোনার পর ছেলের পরিবার দারুণ উৎকন্ঠায় পড়ে। রাত্র ৮ টা থেকে সারারাত ফোন বন্ধ রাখে মেয়ের ভাই গোপাল সরকার ও তার বাহিনীর লোকজনরা। এদিকে নাম না প্রকাশের শর্তে এক মহিলা বলেন,দারুণ বর্বররতা পরিচয় দিয়েছে শশুর বাড়ির লোকজনরা। মৃত্যুর মুখে ফেলে দিয়েছে স্বরূপকাঠি উপজেলার দৈহারী ইউনিয়নের খারারবাগ এলাকার সন্তান সজল মন্ডলকে। সন্ত্রাসী কায়দায় মারধর সহ মানবতা বিরোধী কাজ কর্ম করে চরম বিতর্কিত হয়েছে মেয়ে পরিবার। অথচ পরের দিন শনিবার স্বরূপকাঠি থেকে প্রায় আটজন লোকজন হাজির হয় বনগ্রাম মহিশপুরা এলাকায়।ঘটনা স্থলে গিয়ে অনেক কিছু জানতে পারেন ছেলে পরিবারের সদস্যরা।শনিবারই মৃত্যুর পদযাত্রী অসুস্থ সজলকে স্বরূপকাঠি নিয়ে আসে। এ ব্যাপারে বনগ্রাম মহিশপুরা এলাকার মেম্বার অনিল বলেন, জামাই সজল মন্ডলের উপর যা করা হয়েছে তাহা মহা অপরাধ। এভাবে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। তবে এলাকার চেয়ারম্যানও ঘটনার কথা শুনে চরম হতভম্ব। সামান্য কথা কাটাকাটি নিয়ে এতটা নিচে নামতে পারে মানুষ। তবে স্থানীয় প্রশাসনের লোকজন গণ মাধ্যম কর্মী দের বলেন ৯৯৯ দিয়ে সমগ্র বিষয়টি অবগত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে আমরা মোবাইল রিছিব না হওয়ার পর আমাদের কার্যক্রম সফল ভাবে পরিচালনা করতে পারিনি। তবে মোরলগঞ্জের বনগ্রাম মহিশপুরা এলাকার এঘটনার কথা শুনে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ মেয়ে পরিবারকে চরম নিন্দা জ্ঞাপন করছে। এদিকে স্বরূপকাঠির একটি বেসরকারি ক্লিনিকে শুয়ে থাকা সজল মন্ডল হাউমাউ করে কাঁদত থাকে সাংবাদিক দেখে অসুস্থ সজল মন্ডল। তিনি কান্নারত ভাষায় বলেন, আমাকে আমার শালা গোপাল সরকার ও তার বাহিনীর লোকজন। মেরে ফেলার চেষ্টা করে। আমাকে অলৌকিক ভাবে ভগবান বাচিয়ে রাখেন। আমাকে পরিকল্পিত ভাবে মারধর সহ ইনজেকশন পুশ করে। তবে গণ মাধ্যম কর্মীদের সাথে কথা হয় সজল মন্ডলেট স্ত্রী বিউটি সরকারের সাথে। তিনি অকপটে অনেক কিছু স্বীকার করলেও সন্ত্রাসী ভাই গোপাল সরকারের পক্ষ নিয়েছে সুকৌশলে। এদিকে সজল মন্ডলের এলাকার চেয়ারম্যান প্রগতি মন্ডল গণ মাধ্যম কর্মী দের বলেন সজলের শশুর বাড়ীর লোকজন যা করেছে তাহা মহা অপরাধ। মানুষ এত নিচে নামতে পারে আর তা ভাবতে কষ্ট লাগে। এদিকে সজল মন্ডলের পরিবার আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য নিজ থানা নেছারাবাদে দায়িত্ব প্রাপ্ত ডিডিটি অফিসারের শরণাপন্ন হন। কিন্তু প্রশাসনের সঠিক দিক নির্দেশনা শোনার পর তারা মোরলগঞ্জ থানায় তিনি আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান। সর্বশেষ তথ্য মতে স্বরূপকাঠি উপজেলার দৈহারী ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবী আইনের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের কঠিন শাস্তি হোক। তবে মোরলগঞ্জের বনগ্রাম মহিশপুরা এলাকার মেম্বার সহ সাধারণ মানুষেরও দাবি কঠিন শাস্তি হোক গোপাল সরকার সহ বিবেক, সৌরভ ও অপূর্ব গংদের। তবে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের অভিযোগ দেওয়া হয়নি বলে ছেলে পরিবারের সদস্যরা জানান।
Leave a Reply