বিদেশ ডেস্ক ॥ ইসরায়েলের বিরোধী দলগুলো নতুন সরকার গঠনে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। ফলে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ১২ বছরের শাসনের অবসানের পথ পরিষ্কার হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আটটি দল মিলে জোট সরকার গঠন করতে সম্মত হয়েছে। মধ্যপন্থী দল ইয়েশ আতিদ পার্টির নেতা ইয়াইর লাপিদ এ বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছেন। চুক্তি অনুযায়ী, ডানপন্থী দল ইয়ামিনা পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেত শুরুতে প্রধানমন্ত্রী হবেন। এরপর তিনি ইয়াইর লাপিদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন। সরকারের শপথ গ্রহণের আগে অবশ্য পার্লামেন্টে এ নিয়ে ভোট হতে হবে। ইয়াইর লাপিদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিনকে জোট চুক্তি সম্পর্কে অবহিত করেছেন। তিনি বলেন, আমি অঙ্গীকার করছি যে এই সরকার সব ইসরায়েলি নাগরিকের সেবায় কাজ করবে। যারা এ জন্য ভোট দিয়েছেন, এবং যারা ভোট দেননি সবার জন্য কাজ করা হবে। তিনি আরো বলেন, এই সরকার তার বিরোধীদের সম্মান করবে এবং ইসরায়েলি সমাজের সব অংশকে একত্রিত করতে সাধ্যমতো সব কিছু করবে। ইসরায়েলের গণমাধ্যমে একটি ছবি প্রকাশ হয়েছে। তাতে দেখা যায়- ইয়াইর লাপিদ, নাফতালি বেনেত এবং ইসলামপন্থী রাম পার্টির নেতা মানসুর আব্বাস একটি চুক্তি স্বাক্ষর করছেন। এমন চুক্তিতে উপনীত হওয়াটাকে অনেকেই অসম্ভব মনে করেছিলেন। মানসুর আব্বাস সাংবাদিকদের বলেছেন, সিদ্ধান্তটি খুবই কঠিন ছিল। ‘বেশ কিছু মতপার্থক্য রয়েছে, কিন্তু একটা সমঝোতায় পৌঁছানো খুবই জরুরি ছিল।’ প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিনকে ইয়াইর লাপিদ জানিয়েছেন, বেনেত এবং তিনি নিজে একসঙ্গে সরকার পরিচালনা করবেন। ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নাফতালি বেনেতের কাছ থেকে ক্ষমতা বুঝে নেবেন। রিভলিন যত শিগগির সম্ভব এক আস্থা ভোট আয়োজনের জন্য পার্লামেন্টের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তবে পার্লামেন্টে এই জোট যদি সমর্থন না পায়, তাহলে ইসরায়েলে দুই বছরের মধ্যে পঞ্চমবারের মতো নির্বাচন আয়োজনের দরকার হতে পারে। যে দলগুলো মিলে এই জোট হয়েছে, তার মধ্যে ইসরায়েলের সব ঘরানার রাজনৈতিক দল রয়েছে। রাজনৈতিক দিক দিয়ে এসব দলের মধ্যে খুব কম বিষয়ে মতের মিল রয়েছে। শুধু একটি বিষয় ছাড়া- আর তা হলো দেশটিতে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা নেতানিয়াহুকে ক্ষমতাচ্যুত করা। নেতানিয়াহু দুর্নীতির মামলায় বিচারাধীন রয়েছেন। গত মার্চে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে তিনি চূড়ান্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হন। এটা ছিল গত দুই বছরে দেশটিতে চতুর্থ সাধারণ নির্বাচন, যার পর তিনি জোট গঠনের জন্য মিত্র পেতে ব্যর্থ হন।
Leave a Reply