ভান্ডারিয়া প্রতিনিধি ॥ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনার মধ্যে সরকারি ঘোষনা অনুযায়ী সারাদেশের ন্যায় গতকাল রোবিবার পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় ৫৪৪ দিন বন্ধ থাকার খুলে দেয়া হয়েছে উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। উপজেলার ১৬৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৯ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৮টি মাদরাসা এবং ৮ টি কলেজ একযোগে খোলার কারনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে আনন্দ উৎসব বিরাজ করছে। ইউনিফর্ম পড়ে, কাঁধে বই-খাতার ব্যাগ ঝুলিয়ে দলে দলে শিক্ষার্থীরা ফিরেছে তাদের প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের মধ্যে আছে ভয়, আশঙ্কা। এর মধ্যেও রবিবার সকালে শিক্ষার্থীদের উৎসব মূখর পরিবেশে স্ব-স্ব বিদ্যালয় চলছে কুশল বিনিময়। প্রিয় ক্যাম্পাসে ফিরতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা। প্রিয় শিক্ষক-প্রিয় বন্ধু-সহপাঠীদের পেয়ে কিছুতেই থামছে না আনন্দের উচ্ছ্বাস।
গত দেড় বছরে প্রাথমিকের অনেক হতদরিদ্র শিক্ষার্থী পরিবারের স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন কাজে যোগ দিয়েছে। তাদের অনেকের আর ফেরা হবেনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। মাধ্যমিকস্তরের অনেক শিক্ষার্থীর এরই মধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে। সংসারের পাশাপাশি তারা আবারও শ্রেণিকক্ষে বসবে এমন ভাবনা নেই অধিকাংশের মধ্যে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও হয়তো অনেক শিক্ষার্থীর দেখা মিলবে না শ্রেণিকক্ষে। উপজেলার পৌরশহরের ভান্ডারিয়া বিহারী লাল মিত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সরকারি বন্দর বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম ভান্ডারিয়া শাহাবুদ্দিন ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসা ও ৭৬নং দক্ষিণ ভান্ডারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে স্কুলে আসতে দেখা যায়। প্রথম দিন সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো উৎসব-আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে বরণ করে শিক্ষার্থীদের। এসময় স্কুলগুলোর ফটকে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মেপে প্রবেশ করানো হচ্ছে। তাদেরকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ফটকে স্কুলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষকদেরও অবস্থান করতে দেখা গেছে।
ভান্ডারিয়া বিহারী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনির ছাত্র মুনতাসির বীন মামুন জানান, দীর্ঘ সময়ে পর বিদ্যালয়ে এসে ভালো লাগছে। অনেকদিন পর সহপাটিদের এবং শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। বাসায় এতদিন আলস ও এ্যাসাইন্টমেন্ট লিখে জমাদিয়ে পার করতে হয়েছে সময়টা। ঠিকমতো পড়াশোনা হয়নি। এখন পড়াশোনায় ফিরতে পারবো। ভান্ডারিয়া বিহারী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, আজ আমরা উচ্ছ্বসিত, শিক্ষার্থী ছাড়া আমাদের জীবন অর্থহীন। শিক্ষার্থীদের আসায় বিদ্যালয়টি প্রাণচঞ্চল ফিরে পেয়েছে। সরকারে ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমার বিদ্যালয় পরিচালনা করব। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম জানান, আমি বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছি। সবখানেই দেখেছি সরকারি বিধি নিষেধ মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হচ্ছে। সকল শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামজিক দুরত্ব বজায় রেখে মুখে মাস্ক পরে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করছে। এদিকে ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলামের উদ্দ্যোগে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকক কর্মচারীদের মাঝে বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করে ।
Leave a Reply