মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি ॥ পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী কে.এম.লতীফ ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক ও( ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক পাল্টা পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে। বৈশ্বিক করোনা ভাইরাসে দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিনেই স্কুলে ঢুকতে না পেরে প্রধান শিক্ষক রোববার বিকেলে সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন। অপর দিকে রাত ৮ টার দিকে প্রধান শিক্ষককের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা সহ নানা অভিযোগ এনে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ কতিপয় শিক্ষকের হুমকির কারণে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেননি এমন অভিযোগ এনে তিনি রোববার বিকেলে স্থানীয় উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমি বিদ্যালয়ে ২০১৭ সালে যোগদানের পর থেকে সহকারি প্রধান শিক্ষক মোঃ খলিলুর রহমান আমাকে মেনে নিতে না পারায় বিভিন্ন সময় অসহযোগিতা ও সহকার্মীদের সাথে দূরত্ব সৃষ্টিতে মূখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। এছাড়া আমি যেন অফিসে প্রবেশ করতে না পারি সেজন্য আমার অফিসে তক্তা পিটিয়ে আটকে রেখেছে। তাছাড়া আমার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে জীবন নাশের হুমকি প্রদান করে। বিষয়টি আমি মঠবাড়িয়া থানাকে লিখিতভাবে অবহিত করি। তিনি আরো বলেন, সহকারি প্রধান শিক্ষকের অব্যাহত হুমকির কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে বিদ্যালয়ের কোয়ার্টার ছেড়ে গত মার্চ মাস থেকে বাগেরহাটে একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছি।
অপর দিকে রাত ৮টার দিকে বিদ্যালয় মিলনায়তনে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ খলিলুর রহমান। এসময় তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমন বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, শিক্ষকদের সাথে দূর্ব্যবহার,স্বেচ্ছাচারিতা সহ নানা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে ছাএ, শিক্ষক ও অভিভাবক মানববন্ধন ও লাগাতার আন্দোলন করেন। অবশেষে উপজেলা প্রশাসন ও সরকার দলীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান শারীরিক অসুস্থ্যতার কারন দেখিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমানকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষকের অত্যচারে অতিষ্ঠ হয়ে ২০১৮ সালে ২৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী ম্যানেজিং কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। তখন তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে উক্ত অভিযোগ থেকে মুক্তিপান। এছাড়া ২০২০ সালে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন নিয়ে এক নোংরা খেলায় মেতে ওঠেন এবং তার প্রত্যক্ষ মদদে শিক্ষকদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি হয়। তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়ে দেয়া দুই লক্ষ টাকা দুর্নীতির অভিযোগের প্রমান পেয়েছেন। তাছাড়া প্রধান শিক্ষক সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছেন তা মিথ্যা ভিওিহীন ও বানোয়াট বলে আখ্যায়িত করেছেন। এসময় তার পক্ষে বিদ্যালয়ের ২৯ জন সহকারি শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সাথে সাথেই দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটির নানা অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান দীর্ঘ ৮ মাস পরে বিদ্যালয়েয় পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণের চেষ্টায় অভিভাবকরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তারা মনে করেন প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান কে এম লতীফ ইনস্টিটিউশনের পুনরায় দায়িত্ব নিলে প্রতিষ্ঠানটির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস, ঐতিহ্য হারিয়ে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছবে।ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারজানা রহমান রাইসা’র অভিভাবক সাংবাদিক মজিবর রহমান বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমানকে দ্রুত অপসারণ করে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনের জন্য মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Leave a Reply