বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন গৌরনদীতে ইউএনওর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের কুচুরিপানা ও ময়লা পরিস্কার করল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে গৌরনদীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান-জহির উদ্দিন স্বপন মেয়র হারিছ গ্রেপ্তারের খবরে গৌরনদীতে সাধারন মানুষের উল্লাস ফাঁসির দাবিতে বিএনপির বিক্ষাভ মিছিল গৌরনদীতে এইচপিভি টিকা দান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন কাশিপুরের ড্রেজার ব্যবসায়ী সুমনের অপকর্মে কেউ খুন হলে দায় নেবে না বিএনপি
বিশালাকৃতির ঢেউয়ের আঘাত, বালুক্ষয় আর লাগাতার ভাঙ্গনে ছিন্নভিন্ন কুয়াকাটা সৈকত

বিশালাকৃতির ঢেউয়ের আঘাত, বালুক্ষয় আর লাগাতার ভাঙ্গনে ছিন্নভিন্ন কুয়াকাটা সৈকত

কলাপাড়া প্রতিনিধি ॥ উপকূল জুড়ে প্রচন্ড বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে সৈকতের তীরে আছড়ে পড়া ঢেউ ক্রমশই কুয়াকাটার মানচিত্র বদলে দিচ্ছে। সৈকতের ব্যাপকতা একই থাকলেও প্রতিনিয়তই পরিবর্তন হচ্ছে সৈকতের পুরানো ঐতিহাসিক দৃশ্যগুলো। সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে স্মৃতি বিজড়িত ফয়েজ মিয়ার নারিকেল বাগান, বিলীন হতে বসেছে ঝাউবনে পর্যটকদের জন্য নির্মিত পিকনিক স্পট। গত ক’দিনে সাগর প্রচন্ড উত্তাল থাকায় সৈকতের ওপর আছড়ে পড়া ঢেউ তার নাগালে পাওয়া সবকিছু যেন লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে। সৈকতের তীরে আবাসিক হোটেল এর পাকা ভবনের একাংশ উত্তাল ঢেউয়ের ঝাপটায় ভেঙ্গে গেছে। হুমকির মুখে আছে পাবলিক টয়লেট ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ঢেউয়ের তান্ডবে গাছপালা উপড়ে পড়ে মরে আছে। ভেসে গেছে সৈকতের তীরে দৃষ্টিনন্দন ছাতা বেঞ্চ ও অস্থায়ী ঝিুনকের মার্কেট। গত ৪/৫দিন ধরে চলমান অমাবস্যার প্রভাবে কুয়াকাটা সৈকতের সেইসব দৃশ্যগুলো পাল্টে গেছে, স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ফুট পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় সৈকতে থাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পড়েছে চরম দূ:শ্চিন্তায়। ধ্বংস স্তুপে পরিনত হয়েছে বনবিভাগের নির্দ্দিষ্ট স্থাপনা ও কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান। হুমকীর মুখে পড়েছে কুয়াকাটায় অবস্থিত সম্প্রীতির নিদর্শন হিসেবে খ্যাত মসজিদ ও মন্দিরটি, বাধের বাইরে থাকা পাকা-আধাপাকা বহু আবাসিক হোটেল, ট্যুরিস্ট পুলিশবক্স ও জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে সদ্য নির্মিত ট্যুরিজম পার্ক। সমুদ্রের এমন ভয়ানক মূর্তি বিগত ১যুগেও দেখা যায়নি । ৪/৫ দিনে ২০ থেকে ২৫ফুট ভূগর্ব ভেঙ্গে সমুদ্রের বুকে বিলীন হয়ে গেছে। কুয়াকাটা পৌর কর্তৃপক্ষ জিও বস্তা ফেলে পাবলিক টয়লেট ও তীরে অবস্থিত হোটেল রক্ষার চেষ্টা করলেও ২/৩ দিনের মধ্যে এগুলো সাগর বক্ষে চলে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় এলাকাবাসী।
সৈকত তীরের ঝিনুক ব্যবসায়ী এসহাক বলেন, বুধবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় চলে যান সকালে এসে দেখেন তার দোকানের মালামাল ও দোকানের অনেকাংশই সমুদ্রে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। শুধু তার দোকান নয়, এরকম প্রায় অর্ধশত দোকান ও দোকানের মালামাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানান এ ব্যবসায়ী। আরেক ব্যবসায়ী আ: কুদ্দুস বলেন, ছেলে-মেয়ে নিয়ে কোন প্রকার সংসার চলছিলো অথচ তিলতিলে গড়া তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ কেড়ে নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢেউয়ের দাপটে সৈকতের বহু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙে-চুড়ে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। সমুদ্রের ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে মূল সড়কের শেষ মাথায়। দাঁড়ানোর কোন স্থান নেই। সৈকতে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না পর্যটকরা, ঢেউ এসে উপড়ে পড়ছে তাদের উপর।
ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় আসা এক ডকুমেন্টারী ফ্লিম উদ্দ্যেক্তা জানান, ১যুগ ধরে কুয়াকাটায় আসা-যাওয়ায় প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে সৈকত দেখেছেন। আগের সেই মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যভরা সৈকতের তীর আর বর্তমানের দৃশ্য দেখে তিনি কিছুটা হতাশ। এবার তিনি কুয়াকাটা সৈকতে ভ্রমণে এসে প্রকৃতির এমন চিত্র দেখে বিস্মিত হয়েছেন। তার সামনেই ঢেউয়ের ঝাপটায় নারিকেল, আম, তালগাছসহ কয়েকটি গাছ ভেঙ্গে পড়তে দেখেন। কুয়াকাটা সৈকতকে রক্ষায় আরো জরুরী ও বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। নয়তো সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের এই বিরল শোভা মন্ডিত কুয়াকাটা বিশ্ব পযর্যটনের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে।
কুয়াকাটা প্রেসক্লাব ও কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এসোসিয়েশন (কুটুম)-এর সভাপতি মো: নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, কুয়াকাটা সৈকতের বালুক্ষয় রোধে দীর্ঘমেয়াদি দৃশ্যমান কোন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নেই। বিভিন্ন সময় স্বল্পমেয়াদি যেসব পদক্ষেপ নিতে দেখা গেছে তা নিয়েও রয়েছে নানা দুর্নীতির অভিযোগ। তাই এখনই দরকার অতি দ্রুত এবং সময় উপযোগী বাস্তবমুখি পরিকল্পনা এবং যথাযথ বাস্তবায়ন।
কুয়াকাটা পৌরমেয়র আ: বারেক মোল্লা বলেন, সমুদ্র ভাঙ্গন রোধে পদক্ষেপ নেবার সক্ষমতা ও প্রযুক্তি কুয়াকাটা পৌরসভার নেই, তাই এখন প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ, এ উদ্দ্যেগ নিতে পারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। পৌরসভার পক্ষ থেকে কুয়াকাটা জিরো পয়েন্টে কিছু জিও বস্তা ফেলে সাময়িক রক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে, যা দিয়ে সৈকত রক্ষা করা আদৌ সম্ভব নয়।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com