পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় স্ত্রীর মর্যাদা পাওয়ার দাবিতে দুইদিন অনশনের পর মেহেরিন সুলতানা নামে ওই তরুণীকে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে স্বামী খাইরুল ইসলাম। গতকাল বুধবার রাতে পুলিশের আইনি সহযোগিতায় মেহরিন সুলতানাকে স্ত্রী হিসেবে মেনে নেয় উপজেলার মন্ডতোষ ইউনিয়নের দিয়ারপাড়া গ্রামের খাইরুল ইসলাম ও তার পরিবার।
এর আগে গত মঙ্গলবার দুপুরে মেহেরিন সুলতানা খাইরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে গতকাল বিকেলে মেহেরিন সুলতানা ভাঙ্গুড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তার স্বামী খাইরুল ইসলাম ও শ্বশুর আকবর আলীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই দিন সন্ধ্যার দিকে মেহরিনের স্বামী খাইরুল ইসলাম, শ্বশুর আকবর আলী ও মেহেরিন সুলতানার পরিবারে লোকজনকে নিয়ে থানায় এক সালিস বৈঠকে বসে। বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি আপস মীমাংসা করেন এবং মেহেরিন সুলতানাকে স্বামীর বাড়িতে নিয়ে যেতে সহায়তা করেন।
জানা গেছে, মেহেরিন সুলতানা ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের নৌবাড়িয়া গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে। সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে ছাত্রী মেহেরিন সুলতানা ও খাইরুল একই শ্রেণিতে পড়ালেখা করত। পরে তাদের দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কে হয় এবং মেহেরিন সুলতানা সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন। খাইরুল বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মেহেরিন সুলতানাকে বিয়ের প্রলোভন বিয়ে মেহেরিন সুলতানার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলে। পরে দুজনেই গোপনে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল পাবনা আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে কাজী অফিসের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
এমন অবস্থায় মেহেরিন সুলতানা বিয়ের পর থেকেই তার স্বামীকে স্ত্রীর মর্য়াদা দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু খাইরুল নানা অজুহাতে কৌশলে মেহেরিনকে এড়িয়ে চলতে থাকে। অবস্থা বেগতিক দেখে গত মঙ্গলবার দুপুরের দিকে মেহেরিন সুলতানা তার দিয়ারপাড়ার স্বামীর বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেয়। তবে সে সময় তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে গেলেও মেহেরিন তার স্বামীর বাড়িতে অনঢ় অবস্থান নেয়।
ঘটনাটি জানাজানি হলে ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হাসনাৎ জাহান ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিদা পারভীন পাখি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে গতকাল বুধবার বিকেলে মেহরিন সুলতানা ভাঙ্গুড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগ দেন। ।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, বিষয়টি জানার পর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উভয় পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
Leave a Reply