দুমকি প্রতিনিধি ॥ ‘৭১-এর রণাঙ্গনের সম্মুখযোদ্ধা, পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা রাজা ওয়ালিউল হক মৃত্যুর পর (রাষ্ট্রীয় সম্মান) গার্ড অব অনার প্রত্যাখ্যান করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে প্রেস ক্লাব দুমকির সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে জীবন বাজি রেখে ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। ‘৭৫-এর ১৫ আগস্ট সেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। জাতীয় চার নেতা যারা বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেছেন- ৩ নভেম্বর জেলখানার অভ্যন্তরে ঘাতকরা তাদের গুলি ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তাদের কোথায় কীভাবে দাফন করা হয়েছে তা সবাই জানেন। যেহেতু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, জাতীয় চার নেতাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেয়া হয়নি, তাই আমার মতো একজন অতি নগণ্য ব্যক্তির রাষ্ট্রীয় সম্মান গ্রহণের প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। তিনি বলেন, যদিও হত্যাকারীদের ফাঁসি হয়েছে; তবে এখনও যারা পালাতক আছে তাদের অবিলম্বে দেশে এনে রায় কার্যকর দেখতে পেলে আত্মা শান্তি পেত। এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযোদ্ধা ওয়ালিউল হক বলেন, আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। কোনো কিছু পাওয়ার আশা নেই। তবে মৃত্যুর পর যেখানে তাকে সমাহিত করা হবে সেই গোরস্তান ও সংলগ্ন মসজিদটি উন্নয়নের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। উল্লেখ্য, সহায়-সম্বলহীন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজা ওয়ালিউল হকের পৈতৃক নিবাস উপজেলার জলিশা গ্রামে। মুক্তিযোদ্ধার সরকারি ভাতার ওপর নির্ভরশীল স্ত্রী, কন্যা ও এক নাতিকে নিয়ে উপজেলা শহরের একটি ভাড়া বাসায় জীবনযাপন করছেন। পৈতৃক ভিটা থাকলেও বসবাসের উপযোগী ঘর না থাকায় সারাজীবনই কেটেছে ভাড়া বাসায়।
Leave a Reply