নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করার পর ধর্ষক ভোলা থেকে পালিয়ে গেছে চট্টগ্রামে। পরে চট্টগ্রাম থেকে ভোলা ফিরে ধর্ষিতা ও তার পরিবার আইনের আশ্রয় নিলে তাদের হত্যা করবে বলে হুমকি দেওয়ার পর স্থানীয়ভাবে অনুমান করা হচ্ছে ওই ধর্ষক আবার চট্টগ্রামে চলে গেছে। ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের মেদুয়া গ্রামে ঘটা সেই ধর্ষণের ঘটনার শিকার গৃহবধূ বর্তমানে ভোলা সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ধর্ষণের শিকার গৃহবধূ জানান, গত ২০ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে দশটার দিকে তিনি বাড়ির রান্নাঘরে কাজ করছিলেন। তখন ঘরে কেউ ছিল না। তার স্বামী তখন তাবলিগ জামায়াতে ছিলেন। অন্যদিকে শাশুড়ি রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদে যান বয়স্ক ভাতার আবেদন করতে। এ সুযোগে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা পার্শ্ববর্তী ফকির বাড়ির ইসমাইল ফকিরের ছেলে আলম ফকির তার রান্না ঘরে ঢুকে ওই গৃহবধূকে জড়িয়ে ধরেন। ওই গৃহবধূ এ সময় চিৎকার দিলে রান্নাঘরে থাকা পরিত্যক্ত একটি কাপড় দিযে তার মুখ ও হাত-পা বেঁধে ঘরের চৌকির ওপর নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই গৃহবধূ জানান, ধর্ষণ করা শেষে তার হাতে ১০০ টাকার একটি নোট দিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে না জানাতে বলেন ধর্ষক আলম ফকির। গৃহবধূ টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানালে অন্য সময় আবার আসলে ৫০০ টাকা দেবেন— এই আশ্বাস দিয়ে ওই ১০০ টাকাও নিয়ে যান অভিযুক্ত আলম ফকির।
এদিকে দুপুর আড়াইটার দিকে শাশুড়ি বাড়িতে ফিরলে বিষয়টি গৃহবধূ তাকে জানান। এরপর সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) গৃহবধূর স্বামী তাবলিগ জামায়াত থেকে বাড়ি ফেরার পর ঘটনা জানতে পেরে ধর্ষক আলম ফকিরের বাড়িতে যান। কিন্তু আলম ফকিরের স্ত্রী জানান, আলম চট্টগ্রাম চলে গেছেন। চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে ফিরলে এর একটা সমাধান করে দেবেন বলে স্ত্রী আশ্বস্ত করে ধর্ষিতার স্বামীকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে লোকলজ্জায় ধর্ষিতার স্বামী আবারও ধর্ষকের বাড়ি যান। কিন্তু সেখানে ধর্ষকের ভাই হারুন ফকির ও ধর্ষকের স্ত্রী গালিগালাজ করে তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। এর তিনদিন পর ধর্ষক আলম ফকির চট্টগ্রাম থেকে ভোলায় ফিরে প্রকাশ্যে ওই গৃহবধূ ও তার স্বামীকে হত্যার হুমকি দেন। ধর্ষিতার স্বামী বলেন, ‘আমার স্ত্রী কানে কম শোনে এবং সে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তেমন একটা কথা বলতে পারে না সে। ধর্ষকের হুমকিতে আমি আতঙ্কে আছি। যেকোনো সময় ধর্ষক আমাকে অনেক বড় বিপদে ফেলতে পারে।’ ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এনায়েত হোসেন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি এখন পর্যন্ত অবগত নন। তবে মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply