ভোলা প্রতিবেদক ॥ আইসিইউ, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেমসহ অভিজ্ঞ জনবলের অভাবে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের একমাত্র দ্বীপজেলা ভোলার ২০ লাখ মানুষ। এ অবস্থায় করোনা ও হৃদরোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তাররা। তবে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে শিগগিরই আইসিইউ স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। গত ২২ জুন হার্টের সমস্যা নিয়ে স্কুল শিক্ষক আনোয়ার ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। এ ধরনের রোগীর জন্য আইসিইউ বা ভেন্টিলেটর না থাকায় তাকে করোনা ইউনিটের আইসোলেশনে চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। কিন্তু সেখানেও পর্যাপ্ত অক্সিজেনের ব্যবস্থা না থাকায় বাজার থেকে অক্সিজেন কিনে নিজ বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন ওই শিক্ষক। এই শিক্ষক বলেন, জীবন বাঁচানোর জন্য হাসপাতালে আসছি অক্সিজেনের জন্য। হাসপাতালই বলছে অক্সিজেন নাই। তাহলে আমরা কোথায় যাবো। কি করে বাঁচবো আমরা। একই সংকটের কারণে হৃদরোগ নিয়ে আসা রোগীদেরও সাধারণ ওয়ার্ডেই চিকিৎসা দেয়া হয়। আর রোগীর অবনতি ঘটলে ঢাকা বা বরিশাল রেফার করে দায়িত্ব শেষ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় ২১ জুন সংকটাপন্ন অবস্থায় করোনা আক্রান্ত ভোলার জেলা ও দায়রা জজ এবিএম মাহমুদুল হককে বিশেষ হেলিকপ্টারে করে ঢাকা নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এমন সংকটে সাধারণ রোগীদের অনেকটা বিনা চিকিৎসাতেই প্রাণ হারাতে হয়।
এক রোগী বলেন, যদি এখানে আইসিইউ’র ব্যবস্থা করা হয়। তাহলে আমাদের আর কষ্ট করে বরিশাল ও ঢাকা যেতে হবে না। একজন বলেন, করোনার মহামারিতে আমাদের ভোলা হাসপাতালে অবশ্যই আইসিইউ ইউনিট জরুরি। করোনাকালীন শ্বাসকষ্টের রোগীর সাথে সাথে বেড়ে গেছে মেডিকেল অক্সিজেনের চাহিদাও। এ চাহিদা পূরণে এখনই সরবরাহকারীরা হিমশিম খাচ্ছেন। অক্সিজেন সরবরাহকারী মো. ফিরোজ বলেন, বেশি চাহিদা হলে আমরা সরবরাহ করতে পারবো না। কোম্পানিও অক্সিজেন দিতে পারছে না। আর আইসিইউসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধার অভাবে প্রতিনিয়ত করোনা আর হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে সংকটে পড়তে হচ্ছে চিকিৎসকদের ভোলা সদর হাসপাতাল আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তৈয়বুর রহমান বলেন, আমরা যদি ১০টি আইসিইউ বেডসহ জনবল পাই। তাহলে আমাদের এই হাসপাতালেই তাদের চিকিৎসা সম্ভব। আইসিইউর অভাবে দ্বীপাঞ্চলের মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে উল্লেখ করে শিগগিরই এর সমাধানের আশ্বাস দিলেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ দুই কর্মকর্তা ভোলা সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী বলেন, সবাই মিলে চেষ্টা করছি, আশা করছি শিগগিরই পেয়ে যাবো। আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর পেলে এখানে ভালো চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হবে। নমুনা পরীক্ষায় এ পর্যন্ত জেলায় ২০৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
Leave a Reply