সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে গত এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সরকার ঘোষিত ‘লকডাউন’ কাজে দিলেও ‘লকডাউনের’ দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে ঈদকেন্দ্রিক কেনাকাটা এবং বাড়ি যাওয়া-আসায় যে ভিড় দেখা যাচ্ছে, তাতে দেশে আবার করোনার সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। মূলত পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিন দিনের ছুটি শেষ হয়েছে রবিবার। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে রাজধানী ছেড়ে আপন নীড়ে যায় মানুষ। দূরপাল্লার গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ মানুষ অন্যান্য যানবাহনে করে ভেঙে ভেঙে ঢাকা ছাড়েন। জীবিকার তাগিদে এখন ঢাকায় ফিরছেন কর্মজীবীরা। ফেরার পথেও পাচ্ছেন না দূরপাল্লার গণপরিবহন। তাই যে কায়দা ও কৌশলে তারা বাড়ি গিয়েছিলেন, একইভাবে ফিরছেন ঢাকায়। করোনা কিংবা সরকারি বিধিনিষেধ তাদের যেমন বাড়ি যাওয়া ঠেকাতে পারেনি, তেমনই ঢাকাতেও ফিরছেন কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করেই। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কোনো বালাই নেই। মাস্ক থাকলেও সেটি ঝুলছে কারও কানে, কারও থুতনিতে, কারও বা হাতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা দীর্ঘদিন লকডাউন চালানো সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা এবং রোগী শনাক্ত করে আইসোলেশন (বিচ্ছিন্ন রাখা), রোগীর সংস্পর্শে আসাদের কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) রাখা এবং সীমান্ত এলাকায় কড়াকড়ি নিশ্চিত করা জরুরি। সরকারকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আরও কঠোর হতে হবে। তবে নাগরিকদের নিজেদের স্বার্থে নিজ নিজ দায়িত্বে চলাচল সীমিত রাখা এবং সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। প্রকৃতপক্ষে নিজেদের স্বাস্থ্য ও জীবনের সুরক্ষার বিষয়টি এখন নাগরিকদের নিজের সতর্কতা ও দায়িত্ববোধের ওপরই অনেকাংশে নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে।
Leave a Reply