পটুয়াখালী প্রতিবেদক ॥ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ এবং অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে গত কয়েকদিন ধরে পটুয়াখালীতে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। আমাবস্যার জো-এ শুক্রবার পায়রা নদীর পানি বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। যার ফলে ভাঙ্গা অংশসহ বিভিন্ন বেড়িবাধের ওপর দিয়ে পানি প্রবেশ করছে লোকালয়ে। এতে জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সুপার সাইক্লোন সিডরের পরে এতো পানি পটুয়াখালিবাসী আর কখনো দেখেনি। বিশেষ করে জেলার নি¤œাঞ্চলে বসবাসকারীদের সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোয়ারের পানিতে জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ, চরআন্ডাসহ বিভিন্ন নি¤œাঞ্চল, কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া, নিজামপুরসহ অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে লালুয়া ইউনিয়নের চাড়িপাড়া এলাকার অবস্থা খুবই মারাত্মক। অরক্ষিত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি, ভাটার সময় নামতে নামতে পুনরায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় সীমাহীন দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। ফসলের পাশাপাশি নষ্ট হচ্ছে মাছের ঘের। সব হারিয়ে ক্ষ্যান্ত হচ্ছেন চরাঞ্চলবাসী।
এদিকে ফেরি চলাচল দীর্ঘক্ষন বন্ধ থাকায় গলাচিপার হরিদেবপুর, মির্জাগঞ্জ উপজেলার পায়রাকুঞ্জ, বাউফলের বগা এবং দুমকী উপজেলার লেবুখালী ফেরিঘাটে দেখা দেয় তীব্র যানজট। এতে সড়ক পথে জেলার সাথে বিভিন্ন উপজেলা ও সারা দেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এছাড়া পটুয়াখালী শহর রক্ষা বাঁধের স্লুইসগেটগুলো বিকল থাকায় পটুয়াখালি শহরেও পানি প্রবেশ করেছে। গত দু’দিন ধরে এ অবস্থা চলমান রয়েছে। ভাটায় পানি নেমে গেলেও চরম দূর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে অনেককে। দিন-রাতে দুইবার জেলার অধিকাংশ মানুষ কয়েক ঘন্টা পানিবন্দি থাকছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা নানাভাবে বিঘিœত হচ্ছে।
পটুয়াখালী পৌরসভার নবাবপাড়া, জুবিলী স্কুল সড়ক, পুরাতন হাসপাতাল সড়ক, মহিলা কলেজ সড়ক, সিভিল সার্জন অফিস, সড়ক ও জনপথ অফিস, পৌর নিউমার্কেট, পোষ্ট অফিস সড়ক, শিমুলবাগসহ বিভিন্ন সড়ক ও পাড়া মহল্লা হাটু সমান পানিতে প্লাবিত হওয়ায় চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীদের। এছাড়া ড্রেনেজ ব্যাবস্থা অকার্যকর থাকায় বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যাবসায়ীরা। দোকানে পানি ঢুকে লাখ লাখ টাকার পন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ওয়ালিউজ্জামান বরিশালটাইমসকে জানান, জেলায় বেশ বিছু ভাঙা বেড়িবাঁধ রয়েছে যা মেরামতের জন্য প্রকল্প প্রনয়ণ করে ইতিমধ্যে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া কলাপাড়ার লালুয়াতে ৭ কিলোমিটার অংশ পায়রা বন্দরের মধ্যে পড়ায় সেখানে বেড়িবাঁধ নির্মাণে জটিলতা রয়েছে। তবে হঠাৎ করে পানি বেড়ে যাওয়াকে আশঙ্কাজনক মনে করছেন তিনি।
Leave a Reply