পটুয়াখালী প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় স্বামী পরিত্যক্তা শেফালী বেগম (৬০) নামে এক দিনমজুর নারীর ওপর প্রকাশ্যে দিবালোকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে তারই আপন ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা। তারা ভেঙ্গে দিয়েছে ওই নারীর পা দু’টি। শুধু তাই নয়, ওই পাষ- ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা ধারালো চাকু দিয়ে পায়ের ভাঙ্গা অংশে কুপিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে দেয়। এর ফলে শেফালী বেগমের স্বাভাবিক জীবনে ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পরেছে। বর্তমানে সে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
মাকে রক্ষা করতে গিয়ে মামা ও মামাতো ভাইদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হন শেফালী বেগমের ছেলে আল-আমিন (৩৫) ও তার স্ত্রী পিয়ারা বেগম (২৫)। বাড়ির ভেতর দিয়ে চলাচলের পথের সীমানার বিরোধ নিয়ে ভাই মগফর আলী ফকিরের সঙ্গে বোন শেফালী বেগমের বিরোধ হয়। এ বিরোধের জের ধরে মগফর আলী ফকিরের নেতৃত্বে তার ছেলে ও নাতি কাশেম ফকির, বাবুল ফকির, নাসির ফকির, রিয়াজ ফকির ও মিরাজ ফকিরসহ ১০/১২ জনে মিলে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের মোস্তফাপুর (খলিলপুর) গ্রামে হামলা চালায়। জানা যায়, শেফালী বেগম ঢাকায় ইট ভেঙ্গে জীবিকা নির্বাহ করতেন। করোনার কারণে দীর্ঘ দেড় যুগ পরে বাড়িতে ফিরে পৈত্রিক ভিটায় ঘর তোলেন। কিন্তু বাড়িতে চলাচলের রাস্তার জন্য ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা জায়গা দিতে চাননি। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিশও হয়। সালিশে চার ফুট প্রস্থ রাস্তার পথ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তা মানেননি প্রতিপক্ষ ভাই ও ভাইয়ের ছেলেরা। যার জের ধরে শুক্রবার শেষ বিকেলে শেফালী বেগম এবং তার ছেলে ও ছেলে বউ ওপর হামলা করেন। নির্যাতনের এক পর্যায়ে দুই পা ভেঙ্গে চাকু দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে ক্ষত বিক্ষত করেন হামলাকারীরা।
বিষয়টি জানার জন্য শেফালী বেগমের ভাই মগফর আলী ফকিরসহ ওই পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। চিকিৎসক মো. মাহমুদুর রহমান জানান, শেফালির অবস্থা খুবই শঙ্কাজনক। দুই পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে গেছে। চাকুর অসংখ্য কোপে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল এবং ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। চিকিৎসার জন্য ওই মহিলাকে বরিশাল পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply