বাউফল প্রতিবেদক ॥ স্বামীর চাহিদা অনুযায়ী যৌতুক দিতে না পাড়ায় নাছিমা বেগম (২৯) নামের এক গৃহবধূকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন এক পাষন্ড স্বামী। নিরুপায় হয়ে ওই গৃহবধূ আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের ওয়াদুদ মিয়ার ছেলে জুয়েল রানার (৩২) সাথে একই ইউনিয়নের নুরাইনপুর গ্রামের মৃত বারেক জোমাদ্দারের মেয়ে নাছিমা আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বরপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী স্বর্ণালঙ্কার, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য মালামাল দেওয়া হয়। বিয়ের পর কিছু দিন না যেতেই জুয়েল রানা ও তার পরিবারের লোকজন নাছিমাকে যৌতুকের জন্য বিভিন্ন ভাবে চাপ দিতে থাকে । পিতৃহারা বোন নাছিমার সুখের কথা ভেবে বড় ভাই আনোয়ার তার সাধ্যমত টাকা যোগান দিতেন। ২০১৬ সালে নাছিমার কোল জুড়ে আসে পুত্র সন্তান। তার নাম শাকিবুল হাসান (৪)। নাছিমা ভেবে ছিলেন সন্তানের মায়ায় হয়ত তার সংসারে শান্তি ফিরে আসবে। কিন্তু তার সে আশাও পূরণ হয়নি । তার উপর চালানো হতো অমানবিক নির্যাতন।
এ ঘটনা নিয়ে চলতি বছর ১৭ আগষ্ট সালিস বৈঠক হয়। সালিস বৈঠকের এক পর্যায়ে স্বামী জুয়েল রানা ব্যবসার নামে নাছিমার ভাইয়ের কাছে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। নাছিমার ভাই আনোয়ার হোসেন তার আর্থিক অচ্ছলতা তুলে ধরে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে জুয়েল রানা নাছিমাকে নিয়ে সংসার করতে আপত্তি করেন। এর পর ভাই আনোয়ার বোন নাছিমার শাশুরি ফিরোজা মান্ডির (৬০) পা ধরে ধরে কান্নাকাটি করলেও মন গলেনি তাদের। জুয়েল রানা স্ত্রী নাছিমার গলায় ধাক্কা দিয়ে এক কাপড়ে ঘর থেকে বের করে দেন এবং দাবিকৃত যৌতুকের ১ লাখ টাকা না দিলে তাকে তালাক দিয়ে আরেকটি বিয়ে করবেন বলে হুমকি দেন।
নাছিমার ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার এতিম বোনটির সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য সকল প্রকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যৌতুক লোভী ওই পরিবারের মন গলেনি বরং আমার চোখের সামনে আমার বোনকে গলা ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বরে করে দিয়েছেন। এর পর ন্যায় বিচারের আশায় আমার বোন তার স্বামী জুয়েলের বিরুদ্ধে ২০ আগস্ট পটুয়াখালীর সিনিয়র জুডিসিয়াল মেজিষ্ট্রেট ২য় আদালতে একটি মামলা করেছেন।’ নাছিমার স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন ওই মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করছেন। বর্তমানে নাছিমা তা সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
Leave a Reply