দখিনের খবর ডেস্ক ॥ পটুয়াখালী জেলার অধিকাংশ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পদ খালি। ফলে অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছে এসব কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। কোনো কোনো কলেজে অধ্যক্ষ না থাকায় বন্ধ রয়েছে সেখানকার কর্মচারীদের বেতন ভাতা। করোনার দীর্ঘ বিরতির পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুললে এই সংকট আরও প্রকট হবে বলে আশঙ্কা শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিবাবকদের। বর্তমানে জেলার ৯টি সরকারি কলেজের মধ্যে শুধুমাত্র পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ ছাড়া বাকি ৮টি কলেজ চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে। পটুয়াখালী সরকারি কলেজে রয়েছে ১৬ বিভাগে অনার্স, মাস্টার্স ও বিএ পাস কোর্স। সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে এই কলেজের অধ্যক্ষ পদটি খালি রয়েছে। সেসময় অধ্যক্ষ অধ্যাপক জয়দেব সজ্জন অবসরে গেলে নতুন করে আর কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে বিভিন্ন সময় ভারপ্রাপ্ত এবং চলতি দায়িত্ব হিসেবে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা অধ্যক্ষ’র রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন। পটুয়াখালী সরকারি কলেজের শিক্ষক পরিষদের সচিব এবং বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গাজী জাফর ইকবাল জানান, একজন অধ্যক্ষ একটি কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং কলেজের উন্নয়ন পরিকল্পনা করে থাকেন। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি নির্দিষ্ট টাইম ফ্রেমে কাজ করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন অধ্যক্ষ পদটি খালি থাকায় ধীরে ধীরে কলেজে নানা বিষয়ে সংকট তৈরি হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললে এগুলো আরও দৃশ্যমান হবে। একই অবস্থা জেলার বিভিন্ন উপজেলার নতুন সরকারি হওয়া কলেজগুলোতেও। এর মধ্যে বাউফল সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ হলেও রাজনৈতিক নেতাদের চাপে টিকতে পারেননি তিনি। ফলে বন্ধ আছে ওই কলেজের কর্মচারিদের বেতন-ভাতা। আর মামলা জটিলতায় কলাপাড়া উপজেলার সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজেও অধ্যক্ষ নেই। একইভাবে মির্জাগঞ্জ উপজেলার সুবিদখালী সরকারি ডিগ্রি কলেজ, দশমিনা উপজেলার সরকারি আব্দুর রশিদ খান ডিগ্রি কলেজ, দুমকি উপজেলার সরকারি জনতা কলেজ, গলাচিপা উপজেলার সরকারি ডিগ্রি কলেজ এবং রাঙ্গাবালী উপজেলার সরকারি কলেজ চলছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দিয়ে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটুয়াখালী সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর একেএম শহিদুল ইসলাম বলেন, যেকোনো সরকারি কলেজের একজন অধ্যক্ষ তার স্থানীয় অভিভাবক। একজন অধ্যক্ষ হতে হলে আগে তাকে প্রফেসর হতে হয়। এবং একজন প্রফেসর হতে হলে তাকে কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ বছর চাকরি করতে হয়। এই দীর্ঘ সময়ের অভিজ্ঞতা দিয়ে তিনি কলেজ পরিচালনা করেন। আর একজন প্রফেসর র্যাংকের কর্মকর্তা একটি কলেজ যেভাবে পরিচালনা করতে পারেন তেমনি করে একজন প্রভাষক কিংবা সহকারী অধ্যাপকের পক্ষে সম্ভব না। আর সে কারণেই আমি সরকারের কাছে অনুরোধ করব শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে এবং কলেজগুলোর উন্নয়ন সাধনের জন্য দ্রুত শূন্য পদগুলোতে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হোক। করোনার দীর্ঘ ছুটির পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুললে অধ্যক্ষ না থাকায় শিক্ষা কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
Leave a Reply