নারী নেতৃত্ব বিকাশে সমতার নতুন বিশ্ব গড়ার অঙ্গীকারে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২১। নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়নে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দৃঢ় প্রত্যয়ে সমতাভিত্তিক সমাজ গড়তে নতুনভাবে জাগরণ তৈরি করাও এই অনন্য দিবসটির মূলমন্ত্র। গত বছর ৮ মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়। ছোঁয়াচে এই রোগটিকে রোধ করতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা ছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার পরামর্শ আসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে থেকে। অনেক দেশ সফলভাবে করোনা সংক্রমণকে প্রতিহত করে বিশ্বে নজির স্থাপন করেছে। ফোর্বস ম্যাগাজিন এমন পারদর্শিতার ওপর জরিপ চালিয়ে সামনে নিয়ে আসে নারী নেতৃত্ব ও ক্ষমতায়নের দেশগুলোই করোনা মোকাবেলায় নিজেদের প্রমাণ করতে পেরেছে। নারীদের সামগ্রিক ক্ষমতায়নে ১৪৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান নজরকাড়া, একেবারে পঞ্চম। আর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নেও আমাদের দেশ পিছিয়ে নেই। সপ্তম স্থানের মর্যাদা পেয়েছে বাংলাদেশ। আবার কমনওয়েলথভুক্ত ৫৪টি দেশের অনুপ্রেরণা দায়ী তিন শীর্ষ ক্ষমতাবান নারীর মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামটি স্থান পেয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারীকে দক্ষতার সঙ্গে সামলানোর জন্য আরও ২ জন ক্ষমতাবান নারীর তালিকায় নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন ও বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোতলিও নিজেদের অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২১ সালকে স্বাগত জানানোর প্রাক্কালে কমনওয়েলথ মহাসচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড কিউসি এই তিন আলোকোজ্জ্বল নারীর অনির্বাণ দীপ্তিকে সম্মান জানিয়ে দেন। প্রসঙ্গত এসে যায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় নারীর অবস্থান কিভাবে চিহ্নিত ও নির্দেশিত হয়েছিল। যার অনুসরণ এবং সরাসরি প্রভাব বিস্তারে জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা সার্বিক বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছেন। সমতাভিত্তিক রাষ্ট্রের কাতারে দাঁড়ানোই শুধু নয়, তার চেয়েও বেশি উন্নয়নশীল দেশের নতুন যাত্রাপথের অংশীদারিত্ব পাওয়া। দেশের অর্ধাংশ নারী সমাজ পিছিয়ে থাকলে সামগ্রিক সমৃদ্ধি অনেক বিলম্বিত। বাংলাদেশ সেই সফলতা প্রদর্শনে সক্ষম হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর অসাধারণ ও যোগ্য নেতৃত্বে। বলতে দ্বিধা নেই, বাংলাদেশের উন্নয়নের জোয়ার শুরু হয়েছে ২০০৯ সাল থেকে। এখন তা যুগপূর্তি অতিক্রম করেছে। এই স্বল্প সময়ে সাধারণ জনগণ ও পিছিয়ে পড়া অর্ধাংশ নারীকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে কর্মসাধনা সম্প্রসারিত করেন, তারই আলোর মুখ দেখা ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। উন্নয়ন দশক পার করার পর থেকেই সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ ছাড়াও উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছে যাওয়ার যে অবিস্মরণীয় যাত্রাপথ, তাতে নিয়ামকের ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উন্নয়নের বহুবিধ সূচকে নারীর সফল অংশগ্রহণ দেশকে নিরবচ্ছিন্নভাবে সামনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সমস্ত সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবী নারীর সংখ্যাই শুধু বাড়েনি, বরং সফল নেতৃত্বের আসনে সামনের সারিতে উঠে আসতেও সময় লাগেনি। আগামী দিনেও এই অবধারিত যাত্রাপথ অব্যাহত গতিতে এগিয়ে যাবে নিশ্চয়ই।
Leave a Reply