সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, দেশবিরোধী ধর্মাশ্রয়ী অপরাজনীতির চূড়ামনি হেফাজতের দুই ঘনিষ্ঠ দোসর হলো বিএনপি ও জামায়াত। এদের সম্মিলিত যোগসাজশে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আয়োজনকালে ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাস-সহিংসতা সংঘটিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা হেফাজতের তান্ডবের চিত্র জাতীয় সংসদে তুলে ধরে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এসব অপরাধ-অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ধর্মের নামে এই সমস্ত অধর্মের কাজ জনগণ কখনই মেনে নেবে না, সহ্য করবে না। কিছু লোকের জন্য ইসলাম ধর্মের বদনাম হবে সেটা কখনই মেনে নেয়া যায় না। জনগণ তা মেনে নেবে না। হেফাজতের সদস্যদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে সংসদে প্রধানমন্ত্রী যথার্থই হেফাজতের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আগুন লাগিয়ে জ্বালাও-পোড়াও করে তাদের নেতা বিনোদনের নামে অনৈতিক কর্মকান্ড করতে গেলেন এক রিসোর্টে। এতে বিন্দুমাত্র সংশয় নেই যে এটা কলঙ্কজনক। ইসলাম ধর্মকে তারা ছোট করে দিচ্ছে। কিছু লোকের জন্য এই পবিত্র ধর্মে জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের নাম জুড়ে যাচ্ছে। যা দেশের মানুষের মেনে নেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সারাদেশে তান্ডব সৃষ্টিকারী হেফাজতের নেতা-কর্মীদের ইতোমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জাতিকে আশ্বস্ত করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার অভিযানও চলছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া এখন সময়ের ব্যাপার। আগেও আমরা উল্লেখ করেছি হেফাজতের পরিকল্পিত তান্ডবের কথা। শক্তি সঞ্চয় করে আবার মাঠে নেমেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। আর এর পেছনে রয়েছে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াতে ইসলামী। এখন দলের নেতৃত্বে যারা আছে তারা মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী। এবার তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশতবর্ষের নানা উৎসব-অনুষ্ঠান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আসার বিরোধিতা ইত্যাদিকে ইস্যু করে জ্বালাও পোড়াও-ধ্বংসযজ্ঞে মেতে ওঠে। তারা সংঘবদ্ধ ও সশস্ত্র হয়ে হাটহাজারী থানা আক্রমণ করেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেল স্টেশনে হামলা ও আগুন জ¦ালিয়েছে; ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ দখল করে পুলিশ-জনতা ও সাংবাদিকদের প্রতি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে, সর্বোপরি যাত্রাবাড়ী ও মালিবাগে সড়ক অবরোধ করে আগুন দিয়েছে বাসে। এর আগে সুনামগঞ্জের দিরাই-শাল্লার হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর ঘৃণ্য সাম্প্রদায়িক হামলা এবং বিভিন্ন স্থানে জাতির পিতার ভাস্কর্য ভেঙ্গে দেয়ার পেছনেও কাজ করেছে হেফাজতী নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্য। অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হচ্ছে তারা শাপলা চত্বরের মতো ব্যাপক সহিংস সমাবেশ এবং জ্বালাও-পোড়াও পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। দেশবাসী ধর্মের নামে অধর্ম সৃষ্টিকারী হেফাজতের নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় দ্রুত বিচারের মুখোমুখি দেখতে চায়। রাষ্ট্রবিরোধী এবং মানবতাবিরোধী রাজাকারদের বংশধর এই নয়া বিষধর সাপেরা যেন কিছুতেই ছাড় না পায়।
Leave a Reply